ডেস্ক রিপোর্ট
ব্যাংক খাতের অস্থিরতা কাটাতে পারছে না বিশ্ব। যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইউরোপ কোনো দেশই বাদ যাচ্ছে না অর্থনৈতিক সংকট থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক ও সিগনেচার ব্যাংকের পতনের পর ক্রেডিট সুইসের পতন এ খাতের সংকটকে করেছে আরও তীব্র। তবে এরই মধ্যেই জার্মানির ডয়চে ব্যাংকের ১৪ শতাংশ শেয়ারের দরপতন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
ডয়চে ব্যাংক ক্রেডিট-ডিফল্ট অদলবদল (সিডিএস), ব্যাংকঋণে খেলাপির কারণে ট্রেড ক্রেডিট বীমা রেকর্ডের কাছাকাছি স্তরে পৌঁছেছে। এরই প্রতিক্রিয়ায় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনা কমিয়ে দেন। এতেই সংকটের মুখোমুখি হয়েছে ব্যাংকটি বলে মনে করছেন ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা। গত ২৪ মার্চ ইউরোপীয় ব্যাংকের স্টকে লেনদেন কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সন্দেহ আরও তীব্র হয়। যদিও দিনের শেষ নাগাদ ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিন লাগার্ড মন্তব্য করেন, ইউরোপের ব্যাংকগুলো নিরাপদ আছে এবং তারল্য সংকট নেই।
ডয়চে বাংকের পরিস্থিতি ক্রেডিট সুইসের মতো হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, সুইস ব্যাংক অলাভজনক এবং আইনি জটিলতার মুখে পড়েছিল। এর প্রায় সব আমানতও বীমাবিহীন। কিন্তু একই জায়গায় একটি দীর্ঘ পথ ও তিক্ততার মধ্য দিয়ে পুনর্গঠনের পর ডয়চে ব্যাংক এখন লাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর খুচরা আমানতের প্রায় ৭০ শতাংশ বীমা করা। নগদ অর্থ রাখার ব্যাপারেও তারা সতর্ক। ২০১৬ সালে বিপর্যয়ের মুখে আমানতের অবস্থা খারাপ ছিল। ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটির এখন যথেষ্ট তরল সম্পদ রয়েছে, যা ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নগদ বিনিময় করতে পারে।
ক্রমবর্ধমান সুদের হার সিলিকন ভ্যালি ব্যাংককে (এসভিবি) নিচে নামিয়ে দিয়েছিল। আয় বাড়ার উপায় হিসেবে সুদের হার বৃদ্ধি স্বল্পমেয়াদে ব্যাংকগুলোর জন্য ভালো। ২০২২ সালে ডয়চে ব্যাংক ৫৭০ কোটি ইউরো নিট মুনাফা অর্জন করেছিল, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। কিন্তু ফান্ডের খরচ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকের সম্পদ, যেমন দীর্ঘমেয়াদি বন্ড মূল্য হারায়। গত বছর ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংক নিট সময়কালের ঝুঁকি ও হার বাড়লে ব্যাংকগুলো কতটা শেয়ারদর হারায় সে বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করে।
বিশ্লেষকদের একটি সংস্থা অটোনোমাস রিসার্চের মতে, ডয়চে ব্যাংকের ঝুঁকি উচ্চপ্রান্তে থাকলেও এটি খুব বেশি বিপদ ডেকে আনবে না। এর অবস্থা কখনোই ক্রেডিট সুইসের মতো হবে না। তবে মাঝারি আকারের ঋণদাতাদের কারণে বাণিজ্যিক সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মনে হচ্ছে।
ডয়চে ব্যাংক প্রায় ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলার মূল্যের সম্পদের মালিক। এটি ইউরোপের সবচেয়ে বড় ব্যাংকগুলোর মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে।
সূত্র : রয়টার্স