শনিবার

৩রা জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
২০শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সরকার আগের মতো নির্বাচিত হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে : ফখরুল

 

 

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলেছে, সেটিকে সরকারের আগের মতো নির্বাচিত হওয়ার কৌশল মনে করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

Google News গুগল নিউজে প্রতিদিনের বাংলাদেশ’র খবর পড়তে ফলো করুন

এসব কৌশল জনগণ আর সফল হতে দেবে না উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘এবার জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলে আপনাদের সমস্ত চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দেবে।’

শনিবার (১ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত দুপুর ২টা থেকে শুরু হওয়া দুই ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচিতে এ কথা বলেন তিনি।

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত মাসিক সমন্বয় সভায় কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী সময়ে যেন নির্বাচন করতে পারি, সে বিষয়ে আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রাখব। সংবিধানে নির্দিষ্ট সময়ের আগেও নির্বাচন হতে পারে এমন প্রভিশন আছে। নির্দিষ্ট সময়ের দু-এক মাস আগে ভোট হলেও নির্বাচন করার প্রস্তুতি যেন ইসির থাকে।’

বিএনপি মহাসচিব এ প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, “আপনারা লক্ষ্য করেছেন, বৃহস্পতিবার ইলেকশন কমিশন অফিসে মিটিং হয়েছে। সেখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ‘নির্বাচনের জন্য সব ব্যবস্থা গ্রহণ করব। প্রয়োজনে আগাম নির্বাচনের জন্যও ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’ তারা ভিন্ন কৌশল নিতে চায় যে, আগে আগে নির্বাচন করে গোটা জাতিকে বোকা বানিয়ে আগের মতো নির্বাচিত হতে চায়।’

তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘পরিষ্কার ভাষায় জানিয়ে দিতে চাই, এবার জনগণ আপনাদের আর কোনো কৌশলকে সফল হতে দেবে না। আপনাদের কোনো ফাঁদে পা দেবে না। এবার জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তোলে আপনাদের সমস্ত চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দেবে।’

বিএনপি মহাসচিব জার্মান কবি মার্টিন নিম্যোলারের বিখ্যাত কবিতা ‘ফার্সট দে কেইম’ (বাংলায় ‘ওরা প্রথমত এসেছিল’) আবৃত্তি করে বলেন, আজকে এই অবস্থা হয়েছে, যারা এই সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেছে, তাদেরকে এক এক করে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে, গুম করছে, হত্যা করছে। শ্রমিকদের ধরে নিয়ে গিয়ে গুম করেছে, হত্যা করেছে। ভিন্নমতকে গুম করেছে, হত্যা করেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আছি বলে কথা বলছি। এ দেশের মানুষ কথা বলছে। সব মানুষের কাছে সতর্কবাণী উচ্চারণ করতে চাই- বন্ধুগণ সজাগ হোন, সতর্ক হোন। যারা আজকে অবৈধ ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য ভিন্নমতধারণকারী লোকজনকে হত্যা করছে, গুম করছে, কারাগারে নিক্ষেপ করছে, তাদের হাত থেকে আপনারাও মাপ পাবেন না। একদিন আপনাদেরকেও ধরবে। এখন আমাদের দায়িত্ব সকলে মিলে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। এরা সহজে যাবে না।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা আব্বাস এবং ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আজ যারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছেন, তারা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। যদি কেউ সমালোচনা করেন তাহলে তাদের গায়ে লাগে। কারণ তারা গণতান্ত্রিক নন।’

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব যথাক্রমে আমিনুল হক ও রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, বিএনপি নেতা নবী উল্লাহ নবী, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনসহ দলের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা।

বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ নিত্যপণ্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও দুর্নীতির প্রতিবাদ এবং পূর্বঘোষিত ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে সারা দেশে জেলা ও মহানগরসমূহে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি অংশ হিসেবে ঢাকায় এ কর্মসূচি পালন করল বিএনপি।

রাজধানীতে বিএনপির মিত্র জোট ও দলগুলোও পৃথক স্থানে এ কর্মসূচি পালন করেছে। তাদের মধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) বেলা ৩টায় এফডিসি-সংলগ্ন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে, ১২ দলীয় জোট বেলা সাড়ে ১১টায় পুরানা পল্টন আলরাজী কমপ্লেক্সের সামনে, লেবার পার্টি বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এবং গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস আরামবাগের গণফোরাম চত্বরে বিকাল ৪টায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

আরও সংবাদ

spot_img

সর্বশেষ সংবাদ