নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
দীর্ঘদিন ধরে নানান সমস্যায় জর্জরিত কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। জনবল সংকটে দীর্ঘ ১৮ বছর অযত্ন আর অবহেলায় বিকল হয়েছে উন্নত মানের এক্স-রে মেশিনটি। এছাড়াও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, মেডিকেল অফিসার, নার্স ও ল্যাব টেকনিশিয়ানসহ বিভিন্ন বিভাগে অন্তত ৬৬টি পদ শূন্য রয়েছে। এ অবস্থায় কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে চলছে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লোকবল সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অসংখ্যবার জানানো হলেও কোনো সমাধান মেলেনি।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, কুমিল্লার প্রত্যন্ত অঞ্চল নাঙ্গলকোটে সরকারি স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র বাতিঘর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি। নাঙ্গলকোট পৌরসভাসহ ১৬টি ইউনিয়নের বাসিন্দার রোগ নিরাময়ের কেন্দ্রটি এখন নিজেই রুগ্ন। দীর্ঘদিন ধরে সার্জারি, মেডিসিন, চক্ষু, ইএনটি, কার্ডিওলজী, অর্থো-সার্জারি, চর্ম ও যৌন, নার্স ও টেকনিশিয়ানসহ ৬৬টি পদ খালি রয়েছে। এতে করে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলাবাসী।
উন্নতমানের এক্স-রে মেশিন থাকা সত্ত্বেও ১৮ বছর ধরে বন্ধ ছিল বিভাগটি। গত ছয়মাস আগে একটি নতুন এক্স-রে মেশিন স্থাপন করা হলেও চালু হয় গত মাসে। তাও আবার সাপ্তাহে মাত্র দুই দিন বিভাগটি খোলা থাকে।
হসপাতালের পুরাতন ভবনে গিয়ে দেখা যায়, দেওয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডের টয়লেটের দরজা জানালা ভাঙা। নোংরা বেডসিটে শুয়ে আছেন রোগীরা। পরিবেশন করা হচ্ছে নিম্নমানের খাবার।
হাসপাতাল সূত্র মতে, ২০০৫ সালে ৩০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ওই সময় উন্নত সেবার জন্য প্রায় আট কোটি টাকা ব্যয়ে একটি হাসপাতাল ভবন ও কয়েকটি আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হয়। ওই সময় রোগ নির্ণয়ের জন্য উন্নত একটি এক্স-রে মেশিন স্থাপন করা হয়। তবে লোকবলসহ নানান সমস্যার কারণে মেশিনটি ১৮ বছর বন্ধ থাকায় বিকল ঘোষণা করা হয়।
ছয়মাস আগে নতুন একটি মেশিন স্থাপন করা হলে অপারেটর না থাকায় মার্চ মাসে লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে একজন অপারেটর এনে সাপ্তাহে মাত্র দুইদিন চালু রাখা হয়।